ঝাড়গ্রাম:-শীত মানেই কনকনে ঠাণ্ডা! আর তা যদি পাহাড়ী এলাকায় হয় তাহলে শীতের তাপমাত্রার পারদ একটু বেশি নিম্নমুখী হয়। কনকনে ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা দিতেই প্রান্তিক মানুষজনের জন্য সাহায্যের হাত বার বার বাড়িয়ে দেয় ‘আর্যভ’। অতিমারীর কালেও তা থেকে ব্যতিক্রম ঘটেনি। চারিদিকে কর্ম-সংকট, কষ্টের মধ্যে দিনযাপনের মধ্যেও নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখায় কলকাতার ‘আর্যভ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ নামে একটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
যাঁদের কাছে শীতবস্ত্র থেকে নতুন জামা-কাপড় বিলাসিতা! সেই সব মানুষের পাশে বিগত কয়েক বছর ধরে দাঁড়িয়ে এসেছে সংস্থা। ‘মানুষ হয়ে মানুষের পাশে’ এসে দাঁড়ানোয় সংস্থার মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই ‘আর্যভ’-র সদস্যরা ছুটে যায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। করোনা পরিস্থিতিতেও থেমে নেই তাঁরা। আমফানের দুর্যোগে সুন্দরবনের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মাঝে সরকারি নির্দেশাবলী মেনে কাজ করেছে চলেছেন সংস্থার সদস্যরা।
মূলত,থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছেলে-মেয়েদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও পুজো ও শীতে ছুটে যায় দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। কলকাতা সহ হুগলি, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, বীরভূম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে সেখানকার দুঃস্থ অসহায় দরিদ্র মানুষ গুলির হাতে তাঁদের প্রয়োজনীয় জামা-কাপড়, শীতবস্ত্র, টুপি, কম্বল প্রভৃতি তুলে দিয়েছেন বিগত বছর গুলিতে।
শনিবার সংস্থার পক্ষ থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ি ব্লকের একেবারে প্রান্তিক শিঁয়ারবিন্দা গ্রামে থ্যালাসেমিয়া ও ব্লাড ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা শিবির করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার প্রখ্যাত হেমাটো-অঙ্কোলজিস্ট চিকিৎসক দেবমাল্য ভট্টাচার্য। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে প্রোজেক্টারের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া ও ব্লাড ক্যানসার সম্পর্কে সচেতন করেন। তারপর সেখানকার লোধা-শবর ও দুঃস্থ মানুষজনের হাতে ১০০ কম্বল ও ৫০ জন মহিলাদের হাতে শাড়ি বিতরণ করা হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘আর্যভ’-র সম্পাদক চিরঞ্জীব গোস্বামী, সদস্য রাজা চক্রবর্তী, ভুলাভেদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তপন সর্দার। ‘আর্যভ’-র সভাপতি তথা অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী ফোনে জানিয়েছেন,‘অতিমারীর সময়েও মানুষের জীবন থেমে নেয়। তাই এ ধরনের উদ্যোগে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে আরো বেশি করে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সার্থকতা।’
‘আর্যভ’-র সম্পাদক চিরঞ্জীব গোস্বামী বলেন,‘যে সমস্ত মানুষের কাছে সরকারি-বেসরকারি অনুদান বা সাহায্য এখনও সেভাবে পৌঁছায় না, আমাদের সোসাইটির সদস্যরা জন্মলগ্ন থেকেই তাঁদের পাশেই থেকে এ ধরনের কাজ করে আসছি। থ্যালাসেমিয়া-ক্যানসার সম্পর্কে এদিন সচেতনতা করেন প্রখ্যাত হেমাটো-অঙ্কোলজিস্ট চিকিৎসক দেবমাল্য ভট্টাচার্য। শীতের শুরুতেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এলাকায় তাঁদের সঙ্গেও কিছুটা কষ্ট ভাগ করে নিতেই শীতবস্ত্র ও শাড়ি বিতরণের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল।